এমিলিঃ টুকরো থেকে খুঁজে নেওয়া জীবন


কিচ্ছু না বলার মধ্যেও অনেককিছু বলা থাকে। এই জীবনটাই আসলে একটা চলমান গল্প। আলাদা করে গল্প খুঁজতে যাওয়ায় আর নতুন কিচ্ছু পাওয়া থাকে না। যেমনটা বহুদিন আগে আমার খুব পছন্দের একজন মানুষ হাসিচ্ছলে বলেছিল "জায়গা ছেড়ে দেওয়ার মধ্যেই থাকে অনেকখানি জাগয়া"। সেইরকম জীবন থেকে গল্প খুঁজে নেওয়ার মধ্যেই থাকে সেই উন্মাদনা।

কল্পনার জগত কতটা বিস্তৃত হতে পারে? কতটা তাতে ডুবে গেলে বাঁচা যায় প্রতিটা মুহূর্ত তার পরিমাণ করা বড্ড কঠিন। কতটা আকুতি থাকলে একজন তার চারপাশের প্রতিটা মানুষকে নিয়ে ভাবে তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ এমিলি।
প্যারিসে তখন সত্তর দশক। কোনোএক ছোট্ট শহরের মেয়ে এমিলি। মেয়েটা বড় অদ্ভুত। এবং তার জীবনের ছোট ছোট দুঃখগুলো আরো অদ্ভুত, কখনো হাস্যকর। তবে, এটাই তো জীবনের গল্প। একের দুঃখ যে বরাবরই অন্যের হাসির খোরাক হয়ে এসেছে। যাই হোক, মেয়েটার এক অত্যাশ্চর্য ক্ষমতা আছে। যা কেউ দেখতে পায় না, তাই যেন দেখে মেয়েটা। যৌন উত্তেজনার চেয়ে পথ চলতি দোকানের সামনে রাখা চালডালের বস্তায় হাত ঢুকিয়ে দেওয়াতেই তার বেশি আনন্দের।

যখনকার কথা, তখন রাস্তায় রাস্তায় বসানো থাকতো টেলিফোন বুথ, টেপ রেকর্ডারে জমানো হত তথ্য। দোকানে শাটার ক্যামেরা ছবি তোলার জন্য লাইন দিত মানুষ। সেই ছবি আটকে রাখা হতো চামড়ায় বাঁধানো অ্যালবামে। একটা অদ্ভুত সাম্যতা ছিলো সেই শহরে। মানুষগুলোকে কল্পনা দিয়ে সামনে রাখার দায়িত্ব ছিল একমাত্র এমিলির। আর এভাবেই মানুষগুলোকে আনন্দ দিত, না পাওয়াগুলোকে পাওয়ায় বদলে দিত গোপনে। গোটা সিনেমাটাই যেন একটা শহরের চলমান জীবন, যার কিছুটা ধরেছে এমিলির চোখ। যতটা সরল এমিলি ততটাই এমিলির লাভস্টোরি। শেষ দৃশ্যতে পাওয়া এরকম অপরূপ ভালোবাসার দৃশ্য বিরল। রোমান্টিক শব্দের যেন ভিজুয়াল প্রতিশব্দ এই দৃশ্যটি। সিনেমার শেষে একটা অদ্ভুত ভলোলাগা হয়ে ছেয়ে থাকে সারা দেহে, মনে। 

বি. দ্র.- মনে দুঃখ বাসা বাঁধলে এই সিনেমাটা অন্যরম ভালোলাগার অনুভূতি আনবে।

Comments

  1. খুব প্রিয় সিনেমা। শেষের আবহসঙ্গীতটা কতবার যে শুনি। Audrey Taotao অভিনীত অারেকটি সিনেমাও খুব প্রিয়, এমিলি'র থেকেও বেশী-- A Very Long Engagement.

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

আর্টিকেল ১৫- সামাজিক কদাচারের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠা এক শক্তিশালী হাতিয়ার

9 Types of Bengalis You Will Surely Find in a Durgapuja Pandal